বিশ্বাসঘাতকতা করে কেবল বন্ধুরাই

সাদ্দাম হোসেনকে যখন গ্রেফতার করা হয় তখন তার দায়িত্বে থাকা ১২ জন মার্কিন সৈন্যের একজন ছিলেন উইল বার্ডেনওয়ার্পার। যিনি সাদ্দাম হোসেনের মৃত্যুর পর তাকে নিয়ে '' দা প্রিজনার ইন হিজ প্যালেস, হিজ অ্যামেরিকান গার্ডস, অ্যান্ড হোয়াট হিস্ট্রি লেফট আনসেইড' নামে  একটি বই লিখেন।

বইটিতে তিনি লিখেছিলেন, সাদ্দাম হোসেনকে  ফাঁসির দেবার পর যখন তাঁর মরদেহ বাইরে রাখা হল, তখন একদল মানুষ সেখানে এসে এই মানুষটার মৃতদেহের ওপরে থুতু ছিটিয়েছিল, যারা প্রত্যেকেই ইরাকের নাগরিক; পক্ষান্তরে তার নিরাপত্তায় নিয়জিত সেই ১২ জন আমেরিকার সেনা সদস্যে প্রত্যেকেই কেদেছিল। 

বঙ্গবন্ধুর মত নেতাও মানুষ চিনতে ভুল করেছিলেন। গোয়েন্দা বিভাগ বার বার তাকে সাবধান করে দেবার পরেও তিনি হাসতে হাসতে বলতেন, বাঙালি কোনদিন তাকে মারতে পারবে না। ইন্দিরা গান্ধীর পরিণতি হয়েছিল আরও করুণ। শত্রুর গুলিতে না, তার মৃত্যু হয়েছিল  নিজেরই দেহরক্ষীর গুলিতে।

ইতিহাসের পৃষ্ঠায় পৃষ্ঠায়, এক একটা সাম্রাজ্যের পতন হয়েছে তাদের সব চাইতে কাছের মানুষদের হাত ধরে। সৌদিআরবের বাদশা ফয়সাল যখন তার ভাইপোকে আলিঙ্গন করার উদ্দেশ্যে দু হাত বাড়িয়ে দিলেন, প্রতিউত্তরে  হঠাৎই পকেট থেকে পিস্তল বের করে পরপর তিনটা গুলি করে বসলেন।   গোয়েন্দারা আসামী সনাক্ত করার জন্য অনেক গুলো পদ্ধতি অবলোপন করে থাকে, তার একটি হল প্রত্যেককেই সন্দেহের দৃষ্টিতে দেখা। সব চাইতে বেশি সন্দেহ তাকে করা যাকে মনে হবে সব চাইতে কম সন্দেহজনক !! ইতিহাস আমাদের বার বার শিখিয়ে গেছে, মানুষের জীবনের সব চাইতে বড় যে শত্রু তাকে কখনোই চেনা যায় না, সে থাকে সব থেকে কাছের বন্ধুর মত করে।

আপনার ব্যক্তিগত জীবনেও তাই...

আপনি সব চাইতে বেশি প্রতারিত হবেন আপনার কাছের মানুষদের কাছ থেকে। আপনাকে সব চাইতে বেশি কষ্ট দেয়া মানুষের তালিকা করলে সেখানে শত্রু না, বন্ধুদের নাম দেখতে পাবেন। শত্রু কখনো বিশ্বাস ঘাতক হয় না, বিশ্বাসঘাতকতা করে কেবল বন্ধুরাই।

Comments

Popular posts from this blog

চেনা মানুষগুলো যখন অচেনা....খুউব অচেনা!!!!

জীবন আর জীবনের বাস্তবতা! ২৬-০৭-১৯

জীবন্ত জীবনী